কাভারভ্যান চালক বাবার স্বপ্ন পূরণ মেয়ে চান্স পেয়েছেন ঢাবিতে

রিমন আহমেদ রাজু,নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলাধীন ১৭নং ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মাষ্টার বাজার সংলগ্ন মুন্সি বাড়ির মেয়ে সুমাইয়া আক্তার।এই বছর ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান (বি)ইউনিট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চান্সপ্রাপ্ত হয়েছেন।ভর্তি পরীক্ষায় তার মেধাক্রম ছিলো ১৬০তম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়,সুমাইয়ার বাবা মোঃ মঈন উদ্দিন তিনি পেশায় একজন কাভারভ্যান চালক সামান্যতম আয়ে চলে তাদের সংসার।সুমাইয়ার মা জান্নাতুল ফেরদৌস একজন গৃহিণী পরিবারে দুই ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে চলে তাদের সংসার জীবন।মেয়ে সুমাইয়া আক্তার পরিবারের সবার বড় সে ছোট বেলা থেকে অত্যান্ত মেধাবী ও বিনয়ী ছিলো।পড়াশোনায় আগ্রহ থাকায় বাবা দারিদ্র্যতা থাকলেও মেয়ের পড়াশোয় কখনো অভাব বুঝতে দেয়নি।
সুমাইয়ার শিক্ষা জীবন সম্পর্কে জানা যায়,সে চর লরেন্স গ্লোবাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০২২সালে এসএসসি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন পরবর্তী ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উর্ত্তীণ হন।
সুমাইয়ার স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক হাফেজ আহমেদ পারভেজ বলেন,সুমাইয়া আমাদের গ্লোবাল স্কুল এন্ড কলেজের অত্যান্ত মেধাবী শিক্ষার্থী সে পড়াশোনায় যথেষ্ট আন্তরিক ছিলো যত ঝড় বৃষ্টি হতো সে কোন দিন স্কুল মিস করতো না।মাষ্টার বাজার থেকে সে প্রতিদিন স্কুলে আসতো প্রায় ৬-৭কিঃমিঃ দূরত্ব তবুও সে নিয়মিত স্কুল আসতো।তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পাওয়া খবর শুনে সত্যিই আনন্দিত হলাম।আমাদের স্কুল থেকে এই প্রথম কোন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে দোয়া করি সুমাইয়া যেনো সফল একজন মানুষ হয়।
সুমাইয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়,সে যে গ্রাম থেকে বড় হয়েছে সেটা ছিলো অত্যান্ত দূর্গম অঞ্চল তাদের বাড়ি আশেপাশে শিক্ষার হার নেই বললেই চলে।এখনো ১৩থেকে ১৫ বছরের মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয় তাদের গ্রামে পড়াশোনা মানসিক ভাবে বেড়ে ওঠা ছিলো তার জন্য চ্যালেঞ্জের।তবে তার বাবা মা এবং পাড়াপ্রতিবেশির সহযোগিতা উৎসাহ অনুপ্রেরণা পেয়ে সে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখে।বিশেষ করে তার শিক্ষক সহপাঠী বন্ধুরা ছিলো তার স্বপ্ন পূরণের সারথি।তার বাবা মঈন উদ্দিন ছিলো তার বটবৃক্ষের ন্যায় চায়া সবসময় পড়াশোনায় মনোবল আর সাহস জুগিয়েছেন।সুমাইয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পাওয়া খবর শুনে তার পুরো এলাকা জুড়ে আনন্দের ছড়াছড়ি।
সুমাইয়ার স্বপ্ন,একজন আলোকিত মানুষ হয়ে শিক্ষা জীবন শেষ করে তার গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাওয়া।পাশাপাশি তার ছোট ভাই বোনদের সে যে স্থান গিয়ে দাড়িয়েছে সে স্থানে লক্ষ্য প্রদর্শন করা।সুমাইয়া বলেন দারিদ্রতা বড় কোন বাঁধা নয় আমাদের লক্ষ্য প্রচেষ্টা আমাদের বড় শক্তি।