October 17, 2025

কমলনগর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও ৭ বছর ধরে বেতন তুলছেন অফিস সহায়ক

রিমন আহমেদ রাজু,কমলনগর(লক্ষ্মীপুর)প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসের (৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী) অফিস সহায়ক আয়েশা আক্তার বিগত ৭ বছর ধরে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন উত্তোলন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার স্থলে পারভীন আক্তার নামের এক  নারীকে নামমাত্র মজুরি দিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করন। আর এ অনিয়মটি করতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তা ব্যক্তি নিজেই। উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার সহায়তায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত না থেকেও ৭ বছর ধরে বেতন-ভাত উত্তোলন করা নিয়ে অফিসপাড়ায় চলছে সমালোচনার ঝড়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,আয়েশা আক্তার ১৯৯৫ সালের ২২ অক্টোবর শরীয়তপুরের গোসাইরহাট  উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক পদে যোগদান করেন। ২০১২ সালে একই পদে তিনি লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বদলি হয়ে আসেন। তার বর্তমানে মাসিক বেতন প্রায় ২৬ হাজার টাকা। এর পর ২০১৭ সালের দিকে শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে উপজেলার চরফলকন এলাকার পারভীন আক্তার নামের নারীকে নামেমাত্র মজুরি দিয়ে তার পদে অলিখিত নিয়োগ প্রদান করে আয়েশা। ডিউটি না করেই মাস শেষে অফিসে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন উত্তোলন করে নিয়ে যান তিনি।আর এ কাজটি জেলা ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা পরিষদের তিনজন কর্মচারী। তারা বলেন,বছরের পর বছর ৪র্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী এভাবে ডিউটি না করে বেতন উত্তোলন করার পিছনে অবশ্যই কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে। না হয় কোন ভাবেই এমন অনিয়ম হওয়ার কথা নয়।অভিযুক্ত আয়েশা আক্তারের গ্রামের বাড়ী লক্ষ্মীপুর সদরের ভবানীগন্জ এলাকায়
এ ব্যাপারে বদলীতে ডিউটি করা পারভিন আক্তার বলেন,আমাকে মাসিক ৫ হাজার টাকা চুক্তিতে এ পদে দায়িত্ব দিয়েছেন আয়েশা আক্তার।তিনি মাসে দু-একদিন এসে হাজিরা খাতায় সই স্বাক্ষর করে বেতন তুলে নিয়ে যান।

নিজের র্কমস্থলে অনুপস্থিতি বিষয়ে আয়েশা আক্তার বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে উর্ধতন কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে অবহিত করেই পারভীনকে আমার নিজ অর্থায়নে আমার ওই পদে দায়িত্ব দিয়েছি।

উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আজমল হোসাইন খাঁন বলেন, আমি এ উপজেলায় যোগদানের আগেই আয়েশা আক্তারের পরিবর্তে পারভীন এ পদে দায়িত্ব পালন করতেছে। ২০১৭ সালে তৎকালীন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম পাঠান লক্ষ্মীপুর জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এ অনিয়ম টি করেছেন। এবিষয়ে জেলা কর্মকর্তাকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও তারা কোন প্রদক্ষেপ গ্রহন করেননি।
লক্ষ্মীপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরচিালক জসিম উদ্দীন আহমদ খাঁন বলেন, আমাকে কেউ আগে ঘটনাটি জানায়নি। তবে আমি পরিদর্শনে গেলে তাকে দেখতে পাই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, প্রত্যেক অফিসের জনবল সংশ্লিষ্ট বিষয়টি ওই দপ্তরের নিজস্ব ব্যাপার। বিষয়টি আমি এ প্রথম জেনেছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

About The Author