কমলনগরে মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে চোখ নষ্ট করার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

রিমন রাজু,নিজস্ব প্রতিনিধি:
শিক্ষকের বেতের আঘাতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মাহাদুল কোরআন মাদ্রাসার দ্বিতীয় জামায়াতের শিক্ষার্থী মো. মোহন (১২) ডান চোখ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শিশুটির বাবা আব্দুল করিম।
এরআগে সোমবার (১৮ আগষ্ট) সন্ধ্যা সাতটার দিকে ছুটির পর বাড়িতে যাওয়ার গাড়িতে তারাহুরো করে উঠতে যাওয়ায় সহকারী শিক্ষক ওসমান গণি শিশুটিকে বেধড়ক বেত্রাঘাত করেন। একপর্যায়ে লাঠির আঘাতে ডান চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয় শিশুটি। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে চোখের আলো নিবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় ঢাকায় রেফার্ড করেন চিকিৎসক।
জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় শিশু মোহনকে বেত্রাঘাত করেন ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ওসমান গণি। এতে চোখে আঘাত পায় শিশু মোহন। তার চিৎকার শুনে অপর শিক্ষকরা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চিকিৎসক শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু শিশুটির পরিবার খুবই দরিদ্র ও অর্থ সংকটে থাকায় দু’দিন পর গতকাল বুধবার ঢাকায় নেওয়া হয় শিশুটিকে।
ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা আব্দুল করিম বলেন, আমার ছেলের ডান চোখে মারাত্মক আঘাত রয়েছে। চোখের অবস্থা খুবই খারাপ। মাদ্রাসায় ছেলেকে পড়তে দিয়েছি। এভাবে মারার জন্য দেই নাই। আমার শিশু সন্তানকে যেভাবে মেরেছে এটা খুবই কষ্টের। আমি চিকিৎসা শেষ করে ন্যায় বিচার পেতে আইনের আশ্রয় নিব।
মাহাদুল কোরআন মাদ্রাসার পরিচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসা ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার গাড়িতে উঠতে শিশুটি শিক্ষক ওসমান গণিকে না বলে মাদ্রাসা থেকে বেড়িয়ে পড়ায় রাগের মাথায় একটি চড় মেরেছেন ওই শিক্ষক । এসময় পাশে থাকা দেয়ালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে চোখে সমস্যা হয় শিশুটির। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক ওসমান গণির বক্তব্য চড় নয় লাঠি দিয়ে সামান্য আঘাত করেছেন তিনি। বুঝতে পারেননি এতোটা ক্ষতি হবে।
এবিষয়ে সমাধানের জন্য শিশুটির পরিবারের সাথে আলোচনার চেষ্টা চলছে বলেও জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জহিরুল ইসলাম।
ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, শিশুটির চোখে মারাত্মকভাবে আঘাত করা হয়েছে। মাদ্রাসার পরিচালক জহিরুল ইসলাম অনুরোধ করার পর বিষয়টা নিয়ে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেছি। শিশুটির চোখ পুরোপুরি ভালো হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার তহবিল থেকে খরচ চালানোর কথা বলেছি। কিন্তু জহিরুল ইসলাম সমাধানটি মানেননি। এর আগেও এক শিক্ষার্থীকে মেরে তার চোখ নষ্ট করেছে এই মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক। এছাড়া প্রকাশ যোগ্য নয় এমন ঘটনাও রয়েছে এই মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত উজ-জামান বলেন, এবিষয়ে কেউ আমাকে জানায়নি।খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।